টর্চ ব্যাকআপ ব্যাটারিসহ, পাওয়ার ব্যাংক, ক্যাম্পিং মগ, চাদর, রেইনকোর্ট বা ছাতা, নিয়মতি সেবনীয় ওষুধ, টয়লেট পেপার, ব্যাগ ঢেকে ফেলার মতো বড় পলিথিন, প্লাস্টিকের স্যান্ডেল (চামড়ার স্যান্ডেল পরিহার করা ভাল হবে), সানগ্লাস, ক্যাপ বা হ্যাট, গামছা (যা সহজে শুকাবে), খাবার পানি, হাফ প্যান্ট এবং সহজে শুকায় এমন জামাকাপড়।
টাংগুয়া ভ্রমণের সতর্কতা ও কিছু পরামর্শ
হাওর ভ্রমণকালে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নিন।যে কোন কিছুর জন্যে দামাদামি করে নিবেন।একসাথে গ্রুপ করে গেলে খরচ কম হবে। ৪-৫ জন বা ৮-১০ জনের গ্রুপ হলে ভালো।হাওরে বজ্রপাত হলে নৌকার ছৈয়ের নিচে অবস্থান করুন।হাওরে বজ্রপাত হলে নৌকার ছৈয়ের নিচে অবস্থান করুন। উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী মাইক বা যন্ত্র পরিহার করুন। রাতের বেলা অতিরিক্ত উজ্জ্বল আলো উৎপন্ন করবেন না। টাংগুয়ার মাছ, বন্যপ্রাণী কিংবা পাখি ধরা বা এদের জীবন হুমকির মধ্যে পড়ে এমন কাজ থেকে বিরিত থাকুন। টাংগুয়ার জলাবনের কোন রুপ ক্ষতিসাধন না করার ব্যপারে সতর্ক থাকুন।
বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওরে ২ দিন ১ রাতের ট্যুর প্ল্যান
সুবিধামত যেকোন দিন রাতের বাসে করে সুনামগঞ্জ গেলে সকাল ৭ টার মধ্যে সেখানে পৌছে যাবেন। ঘাট থেকে নৌকা ঠিক করে কিংবা আগেই ঠিক করে রাখা নৌকায় উঠার আগে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করে নিন। সকাল ৯ থেকে ১০ টার মধ্যে নৌকায় যাত্রা শুরু করার চেষ্টা করুন। সোজা নৌকা নিয়ে চলে আসুন ওয়াচ টাওয়ার এলাকায়। এসে গা ভেজাতে পারেন। আর এখানেই হাওরে নৌকা বেধে নৌকার মধ্যে রাত কাটিয়ে দিতে পারেন। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে শিমুল বাগান, যাদুকাটা নদী ও বারিক্কাটিলা দেখতে রওনা দিন। বর্ষায় নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকলে নৌকা করেই যাওয়া যায় নৌকা নিয়ে যাওয়া যায় সব জায়গায়। শুকনো সময়ে নৌকায় না যেতে পারলে মোরটবাইকে করে যাওয়া যায় এই জায়গা গুলোতে।
খাবার ব্যবস্থা
হাউজবোট প্যাকেজ খাবার সহ হয়ে থাকে। আমাদের জলতরী খাবার মেনু হচ্ছে:
জলতরী-JOLTORI হাউজবোটের বিস্তারিত দেখে নিন এক নজরে -
কেবিন/রুম সংখ্যা: ৬ টি
এটাস্ট ওয়াসরুম সংখ্যা: ৬ টি
ক্যাপাসিটি: ১৮ জন (সর্বনিম্ন ১২ জন এবং সর্বোচ্চ ১৮ জন)
প্যাকেজ: সুনামগঞ্জ - সুনামগঞ্জ
❑ ভ্রমণের স্হান সমূহ:
➤ টাঙ্গুয়ার হাওর
➤ ওয়াচ টাওয়ার
➤ শহীদ সিরাজ লেক/ নীলাদ্রি লেক
➤ বারিক্কা টিলা
➤ শিমুল বাগান
➤ যাদুকাটা নদী
➤ লাকমাচড়া ঝর্ণা
* শিমুল বাগানের এন্ট্রি ফি আমাদের প্যাকেজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।
* ভারত - বাংলাদেশ বর্ডারে অবস্হিত লাকমাছড়াতে নীলাদ্রি লেক হতে হেটে বা বাইক/অটো করে যাওয়া যায়।
(বাইক/অটো ভাড়া প্যাকেজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়।)
উল্লেখ্য এই প্যাকেজেগুলোর সাথে মোট ৫ বেলার খাবার ও ৫ বেলা স্ন্যাক্স অন্তর্ভুক্ত।
❑ খাবারের মেনু:
➤ ১ম দিন
ড্রিংকস-০১: ওয়েলকাম ড্রিংকস
নাস্তা-০১: খিচুড়ি, ডিমভুনা, ভর্তা, আচার, সালাদ
স্ন্যাক্স-০১: ফল
লাঞ্চ-০১: ভাত, ভর্তা, হাওড়ের মাছ ভুনা, মুরগির মাংস, ডাল
স্ন্যাক্স-০২: মুড়ি-চানাচুর
স্ন্যাক্স-০৩: চা, বিস্কুট/কেক
ডিনার-০১: ভাত, হাঁস ভুনা, মুরগির গিলা-কলিজা/মুরিঘন্ট, সবজি, ভর্তা, ডাল
➤ ২য় দিন
নাস্তা-০২: আখনী, আচার, সালাদ
স্ন্যাক্স-০৪: চা, বিস্কুট/কেক
লাঞ্চ-০২: ভাত, ভর্তা, হাওড়ের মাছ ভুনা, মুরগির মাংস, ডাল
স্ন্যাক্স-০৫: নুডুলস
* বোটে আনলিমিটেড রং চা এর ব্যবস্হা থাকবে।
* খাবারের মেনু বাজারে আইটেমের এভেইলেবিলিটির উপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে৷
টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়ার উপায়
দেশের প্রায় সব জেলা থেকে সুনামগঞ্জে বাসে আসা যায়। সুনামগঞ্জ হয়ে টাংগুয়ার হাওর যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই সুনামগঞ্জ জেলা শহরে আসতে হবে।
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ:প্রতিদিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন ও শ্যামলী পরিবহণের বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং মহাখালী ও আব্দুল্লাহপুর থেকে ছেড়ে যায় এনা পরিবহণের বাস। এসব নন-এসি বাসে জনপ্রতি টিকেট কাটতে ৮২০-৮৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘন্টা সময় লাগে।
সুনামগঞ্জ থেকে টাংগুয়া: সুনামগঞ্জ থেকে সরাসরি উঠতে পারবেন আমাদের জলতরী নৌকায়।
হাওর ভ্রমণে কি কি দেখবেন
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ শুধুমাত্র হাওর দেখা নয় সাথে আরও কিছু স্পট সাধারণত সবাই ঘুরে দেখে থাকে। টাঙ্গুয়া ভ্রমণ প্যাকেজের সাথে ছোট-ছোট সোয়াম্প ফরেস্ট, ওয়াচ টাওয়ার, ,শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রি লেক),শিমুল বাগান,বারিক টিলা, যাদুকাটা নদী, লাউড়ের গড় সহ আরও বেশ কিছু স্পট ঘুরে দেখা যায়।
টাঙ্গুয়ার হাওর কখন যাবেন!
বর্ষাকাল টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস হাওর ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে ভালো সময়। বছরের অন্য সময় সাধারণত এর পানি অনেক কম থাকে। তবে ভিন্ন এক পরিবেশের টাঙ্গুয়ার হাওর এবং সেই সাথে অতিথী পাখি দেখতে চাইলে শীতকালেই যেতে হবে আপনাকে।
টাঙ্গুয়ার হাওর
জেলার প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। অথৈ পানি, জলাবন, নীল আকাশ, পাহাড় ও চোখ জুড়ানো সবুজ এই হাওরকে অপরুপ সাজে সাজিয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ৬৯১২ একর। তবে বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন বেড়ে প্রায় ২০,০০০ একর পর্যন্ত হয়ে থাকে। টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ এবং ১৫০ প্রজাতির বেশি সরীসৃপের সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। শীতকালে এই হাওরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে।